কেন্দ্রীয় ব্যাংকের বিভিন্ন ঋণ নিয়ন্ত্রণ পদ্ধতিগুলির একটি সংক্ষিপ্ত বিবরণ দাও।
দেশের অর্থনীতিতে ঋণের জোগান নিয়ন্ত্রণ করা কেন্দ্রীয় ব্যাংকের অন্যতম প্রধান কাজ। প্রতিটি বাণিজ্যিক ব্যাংক তাদের মোট আমানতের কিছু অংশ কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কাছে জমা রাখে। এই অবস্থায় কেন্দ্রীয় ব্যাংক বাণিজ্যিক ব্যাংক কর্তৃক আমানত সৃজনের প্রক্রিয়াকে নিয়ন্ত্রণের মাধ্যমে ঋণ নিয়ন্ত্রণ করতে সক্ষম হয়।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের বিভিন্ন ঋণ নিয়ন্ত্রণ পদ্ধতিগুলি হল –
১। ব্যাংক বাট্টার হার (Bank Rate) :
বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলি বিভিন্ন ঋণপত্র কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কাছে বাট্টা করে যখন ঋণ গ্রহণ করে তখন কেন্দ্রীয় ব্যাংক যে বাট্টার হার আরোপ করে, তাকেই বলা হয় ব্যাংক বাট্টার হার। মুদ্রাস্ফীতির সময় কেন্দ্রীয় ব্যাংক বাট্টার হার বৃদ্ধি করে। এর ফলে বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলির ঋণ সংগ্রহের খরচ বৃদ্ধি পায়। সুতরাং বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলিও তাদের প্রদত্ত ঋণের ওপর সুদের হার বৃদ্ধি করে। কাজেই বিনিয়োগ প্রবণতা হ্রাস পায়। এজন্য দেশে কর্মসংস্থান, উৎপাদন ও আয় বৃদ্ধির গতি মন্থর হয়। ফলে অতিরিক্ত চাহিদা এবং মুদ্রাস্ফীতির প্রভাব হ্রাস পায়। মুদ্রা-সংকোচন বা অর্থনৈতিক মন্দার সময় কেন্দ্রীয় ব্যাংক বাট্টার হার কমিয়ে দেয়।
২। পরিবর্তনশীল জমা অনুপাত (Variable Reserve Ratio) :
ব্যাংকিং আইন অনুসারে প্রতিটি বাণিজ্যিক ব্যাংককে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কাছে তাদের মোট আমানত জমার একটি নির্দিষ্ট অনুপাত জমা রাখতে হয়। মুদ্রাস্ফীতি নিয়ন্ত্রণের জন্য কেন্দ্রীয় ব্যাংক এই নগদ-জমা অনুপাত বৃদ্ধি করে। মুদ্রা-সংকোচনের সময় এই অনুপাত হ্রাস করা হয়। এই কারণে এই পদ্ধতিটিকে পরিবর্তনশীল জমা অনুপাত বলে।
৩। খোলা বাজারে কারবার (Open Market Operations) :
সরকারি ঋণপত্র বিক্রয়ের মাধ্যমে কেন্দ্রীয় ব্যাংক মুদ্রাস্ফীতির সময়ে অতিরিক্ত অর্থ জোগান নিয়ন্ত্রণ করতে পারে। মুদ্রা-সংকোচনের সময় কেন্দ্রীয় ব্যাংক ঋণপত্র ক্রয় করে। এই পদ্ধতিটিকেই খোলা বাজারে কারবার বলা হয়।
Liked our post?
We are available with lots and lots of commerce-related content.
[…] […]