শ্রমের ব্যক্তিগত জোগান রেখা পশ্চাৎমুখী হয় কেন তা ব্যাখ্যা করো।
শ্রমের জোগানের উপর মজুরি বৃদ্ধির আয় প্রভাব ও পরিবর্ত প্রভাবের সংমিশ্রণে যে রেখা আমরা অঙ্কন করি তাকে বলা হয় শ্রমের জোগান রেখা।
কোনো শ্রমিকের শ্রমের জোগান রেখার আকৃতি প্রধানত মজুরি বৃদ্ধির আয় প্রভাব ও পরিবর্ত প্রভাবের দ্বারা ব্যাখ্যা করা যেতে পারে।
আয় প্রভাব
প্রথমে মজুরি বাড়লে একটি পর্যায় পর্যন্ত কোনো শ্রমিক হয়তো বেশি কাজ করতে উৎসাহ বোধ করে। কিন্তু অবশেষে এমন একটি অবস্থা আসে যখন বেশি মজুরি পেলেও শ্রমিক আর কাজ করতে চায় না। কারণ তখন আয় যতটা বেড়েছে তা-ই শ্রমিককে বিশ্রাম গ্রহণ করতে প্রণোদিত করে- আর কাজ করতে উৎসাহ প্রদান করে না। এটাকে শ্রমের জোগানের উপর মজুরি বৃদ্ধির আয় প্রভাব বলা হয়ে থাকে। প্রথমে এই আয় প্রভাব ইতিবাচক হলেও একটি পর্যায়ের পর এটি নেতিবাচক হয়ে যায়।
পরিবর্ত প্রভাব
অপরদিকে প্রথমে যখন মজুরি বৃদ্ধির সঙ্গে বেশি কাজ করার উৎসাহ ছিল, তখন বেশি মজুরির প্রত্যাশায় বিশ্রামের পরিবর্তে বেশি কাজ গ্রহণ করার প্রেরণা কার্যকর হত এবং এর ফলে শ্রমের জোগান বাড়তো। কিন্তু এখন মজুরি বেড়ে যাবার পর শ্রম-সময়ের স্থান নিয়ে নিয়েছে বিশ্রাম। এই অবস্থাকে মজুরি বৃদ্ধির পরিবর্ত প্রভাব বলা হয়ে থাকে।
উপরের রেখাচিত্রে OY অক্ষ দ্বারা মজুরি এবং OX অক্ষ দ্বারা শ্রমের জোগান সূচিত হয়েছে। মজুরি 10 টাকা থেকে 50 টাকা পর্যন্ত যতক্ষণ বাড়ছে ততক্ষণ শ্রমের জোগান বাড়ছে। কিন্তু মজুরি 50 টাকার বেশি হয়ে গেলে শ্রমের জোগান আর বাড়ছে না, বরং 50 টাকার পর 60 টাকা অথবা 60 টাকার পর 70 টাকা মজুরি হলে শ্রমের জোগান কমে যাচ্ছে। এই রেখাচিত্রে SL হল শ্রমের জোগান রেখা। শ্রমিকের শ্রমের জোগান রেখা প্রথমে ডানদিকে ঊর্ধ্বমুখী হয়, অর্থাৎ মজুরি বাড়লে শ্রমের জোগান বাড়ে। আবার একটি পর্যায়ের পর এই রেখা বাঁদিকে ঊর্ধ্বমুখী হয় অর্থাৎ মজুরি বাড়লেও শ্রমের জোগান কমে যায়।
সুতরাং, দেখা যাচ্ছে শ্রমের জোগান রেখা প্রধানত মজুরি হারের পরিবর্তনের উপর নির্ভরশীল। পশ্চাৎমুখী শ্রমের জোগান রেখা বলতে বোঝায় যে একটি পর্যায়ের পর মজুরি বৃদ্ধিও শ্রমের জোগান বাড়াতে পারে না।
Liked our post?
We are available with lots and lots of commerce-related content.
[…] শ্রমের ব্যক্তিগত জোগান রেখা […]
[…] রেখাচিত্রে শ্রমের ব্যক্তিগত যোগান রেখা অঙ্কন করে দেখানো হয়েছে। […]